গুজব ছড়াচ্ছে পতিতদের দোসররা -প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, পতিত সরকারের দোসররা গুজব ছড়িয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক কাজকে দমিয়ে রাখতে চাইছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা কলেজ সাংবাদিক সমিতি আয়োজিত দুদিনব্যাপী সাংবাদিকতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এ মন্তব্য করেন তিনি। প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশের একটা বড় অংশ এখন সিটিজেন জার্নালিজম করে। অজ্ঞতার কারণে অনেকে ভুল তথ্য প্রচার করে ফেলে। তবে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ থাকলে এমন ভুল প্রতিরোধ সম্ভব। শফিকুল আলম বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে প্রতিটি জায়গায় নারীদের সরব উপস্থিতি ছিল। শেখ হাসিনাকে বিতাড়িত করতে নারীদের কৃতিত্ব অনেক। নারীরা সামনের সারিতে থেকে আন্দোলন করেছেন। বাংলাদেশ এখন যুগ সন্ধিক্ষণে এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন সময় এসেছে মানুষের চাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে দেশ গড়ার। জুলাই-আগস্টে সব কাজ শেষ হয়নি বলেও জানান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, এখন আলোচনা ও বিতর্ক-বিশ্লেষণের মাধ্যমে সামনে কাজ করতে হবে। কেউ যেন নাগরিকের অধিকার কেড়ে না নেয় সে বিষয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়ে প্রেস সচিব বলেন, স্বৈরাচারের দোসরদের গুজব ছড়িয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক কাজকে দমিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টাকে রুখে দিতে হবে।

পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, গত ৯ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে যারা শহিদ হয়েছেন তাদের পরিবার ৩০ লাখ টাকা করে এককালীন পাবে। এই অর্থবছরে তাদের সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ১০ লাখ করে পাবে। পরের অর্থবছরে প্রতিটি শহিদ পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে দেয়া হবে।তিন ক্যাটাগরিতে আহতরাও পাবেন ভাতা, চিকিৎসা, চাকরিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। গত ৯ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, শহিদ পরিবারকে মাসিক ২০ হাজার টাকা দেয়া হবে। তিনটি মেডিকেল ক্যাটাগরিতে সুবিধা পাবেন। সরকারি, আধা সরকারি চাকরিতে সুযোগ পাবেন। অতি জরুরি এ ক্যাটাগরিতে এককালীন ৫ লাখ টাকা দেয়া হবে। ব্যাংকে চেকের মাধ্যমে। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আজীবন চিকিৎসাসেবা পাবেন। তিনি জানান, ইতোমধ্যে জুলাইয়ের ৮৩৪ জন শহিদের তালিকা গেজেটে প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিটি শহিদ পরিবার এককালীন ৩০ লাখ টাকা পাবেন। এর মধ্যে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা, ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরে জুলাই ২০২৫ জাতীয় সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে বাকি ২০ লাখ টাকা দেয়া হবে। এছাড়াও শহিদ পরিবারকে প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা দেয়া হবে। আহত জুলাই যোদ্ধারা তিনটি ক্যাটাগরিতে চিকিৎসা পাবেন। যথা- ক্যাটাগরি এ, বি ও সি। কোন ক্যাটাগরির কি সুবিধা তা উল্লেখ করেন প্রেস সেক্রেটারি।
আহত জুলাই যোদ্ধারা যেসব সুবিধাদি পাবেন তা হলো—ক্যাটাগরি ‘এ’ (অতি-গুরুতর আহত) ৪৯৩ জন জুলাই যোদ্ধা তালিকাভুক্ত; যারা চিকিৎসার পরও শারীরিক অসামর্থ্যতার নিরিখে অন্যের সহায়তা ব্যতীত জীবনযাপনে অক্ষম। ক্যাটাগরি এ শ্রেণির যোদ্ধারা এককালীন ৫ লাখ টাকা, ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ২ লাখ, ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ৩ লাখ টাকা দেয়া হবে। এছাড়া, মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা পাবেন। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আজীবন চিকিৎসা সুবিধা প্রাপ্ত হবেন তারা। তাছাড়া উপযুক্ত মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশে দেশি-বিদেশি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা পাবেন। কর্মসহায়ক প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন সুবিধা পাবেন। পরিচয়পত্র প্রাপ্ত হবেন এবং পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সুবিধাদি পাবেন। ক্যাটাগরি ‘বি’ (গুরুতর আহত): গুরুতর আহত ক্যাটাগরি ‘বি’তে ৯০৮ জন জুলাই যোদ্ধা তালিকাভুক্ত। যারা পর্যাপ্ত চিকিৎসার পর শারীরিক অসামর্থ্যতার নিরিখে অন্যের আংশিক সহায়তায় জীবন যাপনে সক্ষম হবেন তারা আহত জুলাই যোদ্ধা হিসেবে আর্থিক অনুদান ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রাপ্ত হবেন। এর মধ্যে এককালীন ৩ লাখ টাকা, ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ১ লাখ টাকা, ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ২ লাখ টাকা দেয়া হবে। তারা মাসিক ১৫ হাজার টাকা ভাতা পাবেন। কর্মসহায়ক প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারি/আধাসরকারি কর্মসংস্থান প্রাপ্য হবেন। পরিচয় পত্র প্রাপ্ত হবেন এবং পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সুবিধাদি পাবেন। ক্যাটাগরি ‘সি’ (আহত): আহত ক্যাটাগরি ’সি’তে ১০ হাজার ৬৪৮ জন জুলাই যোদ্ধা তালিকাভুক্ত, যারা চিকিৎসার পর বর্তমানে সুস্থ। আহত জুলাই যোদ্ধারা এককালীন ১ লাখ টাকা, মাসিক ১০ হাজার টাকা পাবেন। এছাড়া পুনর্বাসন সুবিধা, পরিচয়পত্র প্রাপ্ত হবেন এবং পরিচয় পত্র প্রদর্শন করে সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সুবিধাদি পাবেন।

Source link

Exit mobile version