গারো পাহাড়ের বনভূমিতে আগুন

শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের গজনী বিটের বিস্তীর্ণ সরকারি বনভূমিতে আগুনে বিশাল অংশ পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে সরকারি বনজঙ্গলের ক্ষুদ্র প্রাণী, কীটপতঙ্গ, গুল্মলতা ও চারাগাছ ধ্বংসসহ প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট ও অসংখ্য চারা গাছ পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। ফলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গজনী বন বিভাগের সরকারি বনাঞ্চল।
জানা গেছে, গজনী ফরেস্ট বিটের হালচাটি, গান্ধীগাঁওসহ গজনী বিট এলাকার বিস্তৃর্ণ বনাঞ্চলে আগুনের তীব্রতা ক্রমেই বাড়ছে। বাতাসে আগুনের তীব্রতা ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে সদ্য গজিয়ে ওঠা অসংখ্য শাল গজারীসহ নানা প্রজাতির চারা বনজবৃক্ষ। জানা গেছে অচিরেই বনের গাছ নিলামে বিক্রি করা হবে। সেই সুবিধা নিতেই বনবিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বনায়নের অংশীদারদের যোগশাজসে অথবা দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে অথবা বিড়ি সিগারেটের আগুন থেকেও অগ্নিকা-ের সূত্রপাত হতে পারে। তবে বন বিভাগের কর্মকর্তারা বিষয়টিকে সাধারণ দুর্ঘটনা হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন।
ময়মনসিংহ বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল করিম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, শুকনো মৌসুমে শালপাতা অত্যন্ত শুষ্ক হয়ে পড়ে। এছাড়া স্থানীয় বাসিন্দা, পর্যটক ও গরুর রাখালদের ফেলে দেওয়া বিড়ি-সিগারেটের আগুন থেকেও এমন অগ্নিকা- ঘটতে পারে। তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে ১০ থেকে ১৫ স্থানের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে মাইকিং করা হচ্ছে। তবে বন বিভাগে পর্যাপ্ত লোকবল ও সরঞ্জামের অভাব থাকায় সনাতন পদ্ধতিতেই আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে।
জানা যায়, ফি-বছর বন বিভাগের সরকারি বনাঞ্চলে অগ্নিকা- ঘটলেও তাকে নিছক অগ্নিকা- বলে বন কর্মকর্তারা উড়িয়ে দেন। বনকর্মকর্তারা নিজেরাই গাছ চুরির সুবিধার্থে আগুন দেয়ার কাজে জড়িত থেকেই এ ধরণের অগ্নিকা-ে পাহাড় লুটকারীদের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগটি ও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে অভিজ্ঞমহল মনে করেন। এ অগ্নিকা-ের যথাযথ তদন্ত ও দায়ী দুস্কৃতিকারী বা বন কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।