
ইঞ্জিন চালিত অবৈধ ট্রলি ও ব্যাটারি চালিত অটো রিকশার কারণে কুষ্টিয়া সড়ক দিন দিন মানুষের কাছে অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। সড়ক মহাসড়ক এখন অবৈধ যানের দখলে। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল। ১৪ দিনে স্যালো ইঞ্জিন চালিত অবৈধ ট্রলি ও অটোরিকশার ধাক্কায় চার শিশু সহ ৫ জন নিহত হয়।
এদিকে দিনের বেলায় অবৈধ ট্রলি ও বালুভর্তি ড্রাম ট্রাক সড়কে চলাচল বন্ধের দাবিতে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মানববন্ধন করেছে নিরাপদ সড়ক চাই ও বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি নামের দুইটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এতে অংশগ্রহণ করেন কয়েক`শ শিক্ষার্থী।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে কুষ্টিয়া চৌড়হাস প্রতিতি বিদ্যালয়ের প্লে শ্রেণীর শিক্ষার্থী ইব্রাহিম (৫) অবৈধ ট্রলি চাপায় নিহত হয় এবং ইব্রাহিমের দাদি আনোয়ারা (৫০) গুরুত্বর আহত হয়। নিহত ইব্রাহিম সদর উপজেলার বটতৈল গ্রামের সোনা মিয়ার ছেলে।
১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে কুষ্টিয়া-প্রাগপুর মহাসড়কের দৌলতপুর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের কৈপাল হিসনাপাড়া মোড়ে ইটভর্তি ট্রলির ধাক্কায় সাকিম হোসেন (১২) নিহত হয়েছে।
১৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে আটটার দিকে শহরের এন এস রোডের মুঘল কুইজিন নামের একটি রেস্তোরাঁর সামনে অটোরিকশা চাপায় ইশরাত জাহান লাবনী (৪০) নামের এক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা নিহত হন। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
২০ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১২টার সময় স্যালো ইঞ্জিনচালিত মাটি বোঝায় ট্রলি চাপায় আরিয়ান (০৪) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মিরপুর উপজেলার ছাতিয়ান ইউনিয়নের কালিতলা মোড়ে এ দূর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আরিয়ান এলাকার আরিফ জোয়ার্দ্দারের ছেলে।এদিকে সাম্প্রতি কুষ্টিয়ায় ৫দিনে দুই স্কুল শিক্ষার্থীসহ তিনজন শিশুর প্রাণ গেলো এই অবৈধ স্যালো ইঞ্জিনচালিত ট্রলির চাপায়। ১লা মার্চ বেলা ১২ টার সময় কুষ্টিয়ায় মিরপুর উপজেলার বহলবাড়িয়া ইউনিয়নের ঠাকুরপাড়া গ্রামে গরু বোঝাই স্যালো ইঞ্জিন চালিত অবৈধ ট্রলির ধাক্কায় আদিলুর রহমান আদিল (১০) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
নিহত আদিল একই এলাকার আশরাফুল ইসলাম বিশ্বাসের ছেলে ও নওদা বহলবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
অবৈধ যানবাহন চলাচলে হাইকোর্টের নির্দেশনা মানা হচ্ছে না অভিযোগ করে নিসচার কুষ্টিয়া শাখার সভাপতি কে এম জাহিদ বলেন, ‘অবৈধ যানবাহনের ফলে সড়কে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর মিছিল চলছে। অবৈধ অস্ত্র যেমন নিষিদ্ধ, আমি মনে করি অবৈধ প্রাণঘাতী এসব যানবাহনও নিষিদ্ধ করাও জরুরি।’
অবৈধ যানবাহন নিয়ন্ত্রণে পুলিশের অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ, দাবি করে জাহিদ বলেন, ‘কুষ্টিয়া শহরে রাতদিন অবাধে চলছে বালুভর্তি ড্রাম ট্রাম ও শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ট্রলি। এতে স্কুলগামী শিশুরা জীবন সংকটে পড়ছে। অন্তত দিনের বেলা ব্যস্ত সময়ে এসব বালুবাহী যানবাহন বন্ধ হওয়া উচিত।’
ট্রাফিক ইন্সপেক্টর শেখ শাহাদত আলী জানান, গত মাসে ১২০ টি সেলো ইঞ্জিন চালিত অবৈধ যান আটক করা হয়েছে অভিযানে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা সরকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত রয়েছে।