কক্সবাজারে আওয়ামী দোসর খোরশেদ দারোয়ান থেকে কোটিপতি

কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের একজন দারোয়ান খোরশেদ আলম। সাধারণ একজন দারোয়ান থেকে প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজ হয়ে ওঠা আওয়ামী দোসর খোরশেদ আলম এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। দরোয়ানের সামান্য চাকরি করে থাকলেও সে নিয়োগ-বদলি বাণিজ্য, চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ভুক্তভোগীরা একাধিকবার তার অপকর্মের বিরুদ্ধে সরব হলেও আওয়ামী নেতাদের আশকারায় এবং প্রশাসনের নীরবতায় সে বছরের পর বছর অপরাধ চালিয়ে গেছে।

আওয়ামী দোসর খোরশেদ আলম কীভাবে একজন দারোয়ান থেকে এত প্রভাবশালী হয়ে উঠে? অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, খোরশেদ আলম ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে নিজেকে রাজনৈতিক প্রভাবশালী হিসেবে উপস্থাপন করত। সাবেক আওয়ামী এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল ও সাবেক এমপি আশেকের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ ছবি তোলে বিভিন্ন অফিসে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য কাজে লাগাত। কমল ও আশেকের নাম ব্যবহার করে সে মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায় করত।

শ্রমিক লীগের জেলা সভাপতির পদ ব্যবহার করায় তার কাছে অফিসের কর্তা ও ঠিকাদাররা ছিল যেন অসহায়। কর্মস্থলে একদিনও চাকরি না করে সে বেতন নিত বছরের পর বছর। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ওবায়দুল কাদের ও নানকের সঙ্গে ছবি তুলে সে নিজেকে দলের উচ্চ পর্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করত। এই ছবি দেখিয়ে বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তাদে হুমকি-ধমকি দিয়ে সুবিধা নিত এবং চাঁদাবাজী করত। বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে নিজের শক্ত অবস্থান দেখাতো।

জুলাই বিপ্লবের সময় কক্সবাজারে যেসব মিছিল থেকে ছাত্র-জনতার উপর গুলি করা হয়েছে তাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গেছে এই দোসর খোরশেদ আলমকে। দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকলেও গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পুলিশ খোরশেদ আলমকে ঢাকা পালানোর সময় কক্সবাজার রেল স্টেশন থেকে গ্রেফতার করে।

তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই রহস্যজনকভাবে খোরশেদ আলমকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এতে জনগণের মনে একাধিক প্রশ্ন উঠে আসে তাকে কেন ছেড়ে দেওয়া হলো? পুলিশ প্রশাসনের ভেতরে এখনো কি আওয়ামী লীগের দোসররা সক্রিয়? নাকি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ছাড়া পেল সে? অথবা কে তদবির করে ছাড়িয়ে নিল।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা খোরশেদ আলমের মতো দুর্নীতিবাজরা এখনো রয়েছে অধরা। আবার কেউ কেউ আইনের ফাঁক বেরিয়ে যাচ্ছে কারাগার থেকে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও, তাদের দোসররা কক্সবাজারের প্রশাসনে সক্রিয় এবং তারা এখনো অপরাধীদের রক্ষা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভূক্তভোগী, সাধারণ মানুষ ও সচেতন মহল এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চায়। তারা প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে জোরালো দাবি জানাচ্ছে, খোরশেদ আলমের অনিয়ম, দুর্নীতি ও সম্পদের উৎস তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

Source link

Exit mobile version