ওসমান পরিবারের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে: রফিউর রাব্বি

নারায়ণগঞ্জে ওসমান পরিবারের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের দাবি জানিয়েছেন নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বী।
শনিবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় ত্বকী হত্যার ১২ বছর উপলক্ষে আলোক প্রজ্বলন অনুষ্ঠানে তিনি এ দাবি জানান। শহরের চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
রফিউর রাব্বী বলেন, ‘ওসমান পরিবারের সম্পত্তি নারায়ণগঞ্জের মানুষের রক্তে গড়া। এই পরিবারের সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের কোষাগারে জমা করতে হবে। তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। দলের সর্বোচ্চ মহল, মন্ত্রী, এমপি, আমলাসহ সকল পর্যায়ে তারা এই লুটের টাকা বণ্টন করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দলীয় নেতারা বলেছেন, মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে দশ কোটি টাকা দিয়ে “নাসিম ওসমান সেতু”, “শামসুজ্জোহা সড়ক” ও “নাগিনা জোহা সড়ক” নামকরণ করা হয়েছে। সে সময় প্রশ্ন করেছিলাম, আমরা জানতে চাই নারায়ণগঞ্জে এই মানুষগুলোর অবদান কী? কেন একই সাথে তিনটি রাস্তা ও সেতুর নাম একই পরিবারের নামে করা হলো। তারা তখন আমার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়েছিল। আমরা আজকে সরকারের কাছে এই খুনী পরিবারের নামে থাকা সেতু ও সড়কের নাম পরিবর্তনের দাবি করছি।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ত্বকীসহ দেশে বহু হত্যার বিচার বন্ধ করে রেখেছিলেন। গুম, খুন, আয়নাঘর প্রতিষ্ঠা করে বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ভয়াবহ এক রাষ্ট্র-ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। রাষ্ট্র-ক্ষমতার মোহ তাকে উন্মাদ করে ফেলেছিল। কিন্তু হাজারো ছাত্র-তরুণদের হত্যা করেও তিনি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেননি। তিনি পুরোপুরি নির্ভর করেছিলেন পুলিশ ও মাফিয়াগোষ্ঠীর ওপর। জনগণ ছিল উপেক্ষিত। নারায়ণগঞ্জে ওসমান পরিবারকে দিয়ে মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে রেখেছিলেন। সে পরিবার আজ তার মতোই পালিয়ে গেছে।’
নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় এসময় খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি রথীন চক্রবর্তী, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান মাসুম, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা ভবানী শংকর রায় ও নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দীপু উপস্থিত ছিলেন।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ সড়কের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। এর দু’দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/এমএন/এমএস