ওয়ানডে ক্রিকেটকে স্মিথের বিদায়

চলমান আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে যাওয়ার পর ক্যারিয়ারে বড় এক সিদ্ধান্ত নিলেন স্টিভেন স্মিথ। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা ওয়ানডে ক্রিকেটকেই বলে দিলেন বিদায়।
দুবাইয়ে মঙ্গলবার ভারতের বিপক্ষে হারের পর ড্রেসিংরুমে ফিরে সতীর্থদের অবসরের কথা জানিয়ে দেন ৩৫ বছর বয়সী স্মিথ।
বয়স ও ফর্ম বিবেচনায় দলের ২০২৭ বিশ্বকাপ পরিকল্পনায় ভালোভাবেই থাকতেন এই তারকা ব্যাটার। কিন্তু বিশ্বকাপ সামনে রেখে এখন থেকেই তরুণদের নিয়ে দল গঠনের সুযোগ করে দিতে এই সিদ্ধান্ত নিলেন স্মিথ। বিদায় বেলায় বিশেষভাবে তিনি স্মরণ করলেন বিশ্বকাপ জয়ের স্মৃতি।
“দারুণ এক ভ্রমণ ছিল এটি, প্রতিটি মিনিট আমি উপভোগ করেছি। এত বেশি অসাধারণ সময় কেটেছে এবং দুর্দান্ত সব স্মৃতি আছে! চমৎকার সব সতীর্থকে সঙ্গী করে দুটি বিশ্বকাপ জয় করা ছিল সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য।”
“২০২৭ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়ার উপযুক্ত সুযোগ এখনই। কাজেই আমার মনে হয়েছে, তরুণদের জায়গা করে দেওয়ার সঠিক সময় এসেছে।”
টেস্টের সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটার ওয়ানডেতেও উজ্জ্বল। ১৭০ ম্যাচে ১২টি সেঞ্চুরি ও ৩৫টি ফিফটিতে ৪৩.২৮ গড় ও প্রায় ৮৭ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৫ হাজার ৮০০ রান। এই সংস্করণে তার সর্বোচ্চ ইনিংস ১৬৪ রানের।
২০১০ সালে মেলবোর্নে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয় স্মিথের। দলে তখন তিনি ছিলেন স্পিনিং অলরাউন্ডার। ব্যাটিংও করতের লোয়ার মিডল অর্ডারে। সময়ের পরিক্রমায় ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়ে উঠে আসেন টপ অর্ডারে। এরপর তো দলে বিশেষজ্ঞ ব্যাটার হিসেবেই খেলেছেন প্রায় দেড় দশক। মেলবোর্নে শুরু হওয়া তার সেই পথচলা থামল দুবাইয়ে।
ঘরের মাঠে ২০১৫ বিশ্বকাপ জয়ে দারুণ ভূমিকা ছিল স্মিথের। ৭ ইনিংসে ১ সেঞ্চুরি ও চার ফিফটিতে করেছিলেন ৪০২ রান। সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ৯৩ বলে ১০৫ এবং ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করেছিলেন অপরাজিত ফিফটি। তার মারা বাউন্ডারিতেই জয়সূচক রান পায় দল।
২০২৩ বিশ্বকাপে ১০ ম্যাচে ৩৩.৫৫ গড়ে স্মিথের ব্যাট থেকে আসে ৩০২ রান। ব্যাট হাতে অতটা সফল না হলেও দলের লিডারশিপ গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ একজন ছিলেন তিনি।
২০১৫ সালের আইসিসি বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে জায়গা পাওয়া স্মিথ দুবার জিতেছেন অস্ট্রেলিয়ার বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারের পুরস্কার।
সম্প্রতি অবশ্য ব্যাটে ভাটার টান। ২০২৩ বিশ্বকাপের পর ১৫ ইনিংসে ফিফটি কেবল ৩টি। ২০২২ সালের পর পেরিয়ে গেছে ৩৩ ইনিংস, এখনও সেঞ্চুরি পাননি।
টেস্টে অবশ্য এখনও বিশ্বসেরাদের একজন স্মিথ। সবশেষ ৫ টেস্টে চারটি করেছেন সেঞ্চুরি। বিদায় বেলায় টেস্টের প্রতি অনুরাগের কথাই জানিয়েছেন তিনি। এই সংস্করণে খেলতে চান অরও অনেকটা বছর।
“টেস্ট ক্রিকেট আমার কাছে সবচেয়ে বড় প্রাধান্য হয়েই থাকছে এবং টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলতে, এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর ও পরে দেশে মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে মুখিয়ে আছি। আমার বিশ্বাস, এখানে আমার আরও অনেক অবদান রাখার সুযোগ আছে।”