
চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীতে ২০২৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর এমভি আল-বাখেরা নামের সারবাহী নৌযানে হত্যার শিকার হন ছয়জন। ওই ছয়জনের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে মোট ৩০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এ অর্থের চেক হস্তান্তর করেন।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নিহত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারের হাতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন থেকে ২ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়। এছাড়া নৌপরিবহন উপদেষ্টার বিশেষ উদ্যোগে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান নোয়াপাড়া গ্রুপ থেকে অনুদান হিসেবে প্রত্যেককে ৩ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
চেক বিতরণকালে উপদেষ্টা বলেন, এমভি আল-বাখেরা সারবাহী নৌযানে হত্যার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটিকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। নির্মম এ হত্যাকাণ্ডে নিহত শ্রমিকদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। মানবিক কারণেই ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।
এ সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে উপযুক্ত ব্যক্তিকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেন।
এমভি আল-বাখেরায় নিহত শ্রমিকরা হলেন- মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার দাউদ হোসেনের ছেলে সজিবুল ইসলাম, একই উপজেলার মো. আনিচ মিয়ার ছেলে মো. মাজিদুল ইসলাম, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মো. আবেদ মোল্ল্যার ছেলে মো. সালাউদ্দিন মিয়া, একই উপজেলার মজিবর মুন্সীর ছেলে
আমিনুর মুন্সী, ফরিদপুর সদরের মো. আতাউর রহমানের ছেলে শেখ সবুজ, এবং মো. আনিসুর রহমানের ছেলে মো. কিবরিয়া।
পবিত্র রমজান উপলক্ষে নৌপথে নিরাপদে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাস ও পরিবহনের ক্ষেত্রে বর্তমানে লাইটার জাহাজের কোনো সংকট নেই।
তিনি বলেন, কিছু আমদানিকারক কর্তৃক লাইটার জাহাজকে ভাসমান গুদাম বা ফ্লোটিং ওয়্যার হাউস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে- এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নৌপরিবহন অধিদপ্তর এবং বিআইডব্লিউটিএর ম্যাজিস্ট্রেটরা গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। কোথাও কোনো পণ্য মজুত যাতে না হতে পারে সে বিষয়ে কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী আমদানি হচ্ছে। সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। ভোজ্যতেলের আমদানি এবং দ্রুততম সময়ে ভোক্তার কাছে যাতে পৌঁছাতে পারে সে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে সরকার দেখছে।
পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় কোনো ঘাটতি নেই উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, কোনো আমদানিকারক বন্দর থেকে নির্ধারিত সময়ে পণ্য না নিলে তিনগুণ জরিমানা দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ। এসময় নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এমএএস/কেএসআর