
ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট জাভেদ জারিফ পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে নিজের পদত্যাগপত্র প্রকাশ করেছেন। দীর্ঘ ৪০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে তিনি যে সময়টা সবচেয়ে তিক্ত বলে উল্লেখ করেছেন, তা হলো গত ছয় মাস। এই সময়কালে নিজের এবং পরিবারের জন্য তিনি অপমান এবং অপবাদ সহ্য করেছেন বলে জানিয়েছেন।
জাভেদ জারিফ পদত্যাগপত্রে লেখেন, “গত ছয় মাসে আমি ও আমার পরিবার ব্যাপক অপমান এবং মিথ্যা অভিযোগের শিকার হয়েছি।” তিনি আরও বলেন, জাতীয় স্বার্থে কাজ করতে গিয়ে তিনি বহু অপমান সহ্য করেছেন এবং মিথ্যা অভিযোগের মুখেও নীরব ছিলেন। জারিফ আশা প্রকাশ করেছেন যে, তার পদত্যাগের মাধ্যমে সরকারের সফলতা অর্জনে কোনো বাধা থাকবে না। তবে, প্রেসিডেন্টের দপ্তর তাৎক্ষণিকভাবে জানায়নি, জারিফের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে কিনা
জাভেদ জারিফ ২০১৫ সালে পশ্চিমাদের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সরকারের সময় ৮ বছর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। তিনি সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের পরামর্শদাতা হিসেবেও কাজ করেছিলেন। তবে সমালোচকদের অভিযোগ, জারিফকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া সংবিধান লঙ্ঘন হতে পারে, কারণ তার সন্তানরা যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছে।
এদিকে, ইরানের অর্থমন্ত্রী আবদোলনাসের হিম্মাতিকে পার্লামেন্টের ভোটে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। হিম্মাতির বিরুদ্ধে ১৮২ জন এমপি ভোট দিয়েছেন এবং পক্ষে ভোট দেন ৮৯ জন এমপি। হিম্মাতির আমলে ইরানি রিয়ালের মূল্য তীব্রভাবে পড়েছে। গত বছর অর্থমন্ত্রী হওয়ার সময় ১ ডলার ছিল ৫ লাখ ৯৫ হাজার ৫০০ রিয়াল, আর এখন ১ ডলারের বিপরীতে রিয়ালের মান ৯ লাখ ২৭ হাজারে পৌঁছেছে।
এই পদত্যাগ এবং অর্থমন্ত্রী হিম্মাতির বিদায়ের পর, ইরানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় নানা দুর্বলতা এবং সরকারী পদক্ষেপ নিয়ে জনমনে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে ইরানের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি