ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় নিহত ২৫

ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বশেষ হামলায় কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছে। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, সেখানে সংঘাত থামার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। খবর বিবিসির।
দোনেৎস্ক অঞ্চলে একটি হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ১১ জন নিহত এবং আরও ৪০ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে ছয়জনই শিশু বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। খারকিভ এবং ওডেসাসহ অন্যান্য অঞ্চলেও বেশ কিছু বাড়ি-ঘর এবং স্থাপনায় হামলার খবর পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার পর গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে। এদিকে গত কয়েকদিনে ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে রাশিয়ার হামলা বেড়ে গেছে।
রাশিয়ার সর্বশেষ হামলার পর পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক বলেছেন, যখন কেউ বর্বরদের সন্তুষ্ট করে তখন এমনটাই ঘটে। তিনি বলেন, আরও বোমা হামলা, আগ্রাসন চালানো হচ্ছে এবং আরও মানুষ মারা যাচ্ছে।
শুক্রবার গভীর রাতে দোনেৎস্ক অঞ্চলের দোব্রোপিলিয়া শহরে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা চালানো হয়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেখানে আটটি আবাসিক ভবন এবং একটি শপিং সেন্টারে দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানলে কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়।
জরুরি পরিষেবার লোকজন পৌঁছানোর পর রাশিয়া উদ্ধারকারীদের লক্ষ্য করে ইচ্ছাকৃতভাবে আরেকটি হামলা চালিয়েছে বলে জেলেনস্কি একটি টেলিগ্রাম পোস্টে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের হামলা এটাই প্রমাণ করে যে রাশিয়ার লক্ষ্য অপরিবর্তিত রয়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছে, শুক্র ও শনিবার ওই অঞ্চলে অন্য একটি হামলায় ৯ জন নিহত এবং আরও ১৩ জন আহত হয়েছে।
শনিবার ভোরে খারকিভ অঞ্চলের বোহোদুখিভে একটি কোম্পানিতে ড্রোন হামলায় তিনজন নিহত এবং সাতজন আহত হয়েছেন বলে আঞ্চলিক প্রধান ওলেহ সিনেহুবভ জানিয়েছেন।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তার কাছে মনে হচ্ছে শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতার ক্ষেত্রে রাশিয়ার চেয়ে ইউক্রেনকে সামলানো বেশি কঠিন। ওভাল অফিস থেকে শুক্রবার সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, কিয়েভের চেয়ে মস্কোকে সামলানোই বেশি সহজ এবং যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গেই ভালো কাজ করছে।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত রাশিয়ার ওপর বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপের বিষয়টি শক্তভাবে বিবেচনা করছেন তিনি।
অন্যদিকে মহাকাশ প্রযুক্তি কোম্পানি মাক্সার বিবিসিকে জানিয়েছে, কিছু ভূ-উপগ্রহ চিত্রে ইউক্রেনের প্রবেশাধিকার সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছে দেশটি। হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বাগবিতণ্ডার পর যুক্তরাষ্ট্র এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর জের ধরে চলতি সপ্তাহে ট্রাম্প সব সামরিক সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় স্থগিত করেন। রাশিয়া এরপর বৃহস্পতিবার রাতে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালিয়েছে। ওই হামলার প্রতিক্রিয়াতেই যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক নিষেধাজ্ঞায় থাকা রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।
টিটিএন