আলফাডাঙ্গা পৌরসভার নাগরিকসেবা পেতে ভোগান্তি

ফরিদপুর আলফাডাঙ্গা পৌরসভার কাউন্সিল অপসারিত হওয়ার পর সরকার কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য উপজেলায় সমাজসেবা কর্মকর্তা ও উপজেলার শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে পৌর নাগরিক সেবার ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার সরজমিনে শিক্ষা অফিসে গেলে এসব অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন বলে আখ্যা দিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহা রফিকুল ইসলাম। একই সময়ে সমাজসেবা কর্মকর্তা ঝুমুর সরকারের অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি সরকারি অফিসে। অফিস টাইমে তার রুমে তখন তালা ঝুলছিল।

দীর্ঘদিন যাবৎ পৌরসভার সেবা পেতে বাড়তি ভোগান্তি পোহাচ্ছেন নাগরিকরা। জন্ম-মৃত্যু, নাগরিক ও ওয়ারিশ সনদ পেতে দুই থেকে আড়াই মাস পর্যন্ত লাগছে। সেবাপ্রার্থীরা ইনকিলাবকে অভিযোগ করে বলেন, মেয়রের দায়িত্বে প্রশাসক ও কাউন্সিলরের পরিবর্তে সরকারি দফতরের প্রধানরা আসায় ঠিক মতো মিলছে না সেবা। কয়েক মাস ধরেই নাগরিক সেবা ঠিকমতে পাচ্ছে না পৌরসভা কার্যালয় থেকে। পৌরসভায় প্রশাসকের দায়িত্বে আছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেল ইকবাল। কাউন্সিলরের পরিবর্তে ১, ২, ৫নং ওয়ার্ড উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহা. রফিকুল ইসলাম। ৮, ৯নং ওয়ার্ড সমাজসেবা কর্মকর্তা ঝুমুর সরকার। ৩, ৪নং ওয়ার্ড যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এ কে এম মাকসুদুল হাসান। ৬,৭নং ওয়ার্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাহাত ইসলাম দ্বায়িত্বে আছেন।

ভুক্তভোগী ১নং ওয়ার্ড আসমা দেড় মাস, সালেহা ১নং ওয়ার্ড এক মাস, ৫নং ওয়ার্ড ইছাপাশা আড়াই মাস রুবাইয়া, ২নং ওয়ার্ড আল-আমীন তালুকদার এক মাসসহ নাগরিক সনদ পাওায়ার জন্য ঘুরছেন বলে সকলেই ইনকিলাবকে অভিযোগ করেন। বেদনা ৪নং ওয়ার্ড সার্টিফিকেট, সিয়াম ৪নং ওয়ার্ড এক মাস নাগরিক সনদ, ২নং ওয়ার্ড ওবাদুর দেড় মাস নাগরিক ও ওয়ারিশ সনদের জন্য তারা সকলে দিন-রাত চরম ভোগান্তিতে আছেন তারা।

পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, সনদের কোনো আবেদন পৌরসভার দায়িত্বরত কর্মচারী গ্রহণ করে ভেরিফিকেশনের জন্য নেন কাউন্সিলরের কাছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্ব দেন অফিসের দু’জন কর্মকর্তাকে। তারা সম্মতি দিলেই অনুমোদন দেন কাউন্সিলর। আবার কাউন্সিলর বাইরে থাকলে তার কর্মস্থলে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। ফলে এখন একটি আবেদন অনুমোদনে চারটি ভেরিফিকেশন লাগছে। অথচ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি একবার ভেরিফিকেশন সই দিলেই অনুমোদন হয়ে যেত। সেটা এখন হচ্ছে না। তাই সরকারি লোকদেরও ভোগান্তি।

পৌরসভার বাসিন্দা তমা আক্তারি ইনকিলাবকে বলেন, সমাজসেবা কর্মকর্তা ঝুমুর সরকার, নিয়মিত অফিস না করায় তার টেবিলের নাগরিক সেবার আবেদন দিনের পর দিন পড়ে থাকে। নাগরিকদের অপেক্ষার পর অপেক্ষায় থাকতে হয় ১০-১৫ দিনও।

শিক্ষা অফিসার মোহা. রফিকুল ইসলাম অমনোযোগী হওয়া ঠিক মতো মিলছে না সেবা। সমাজসেবা অফিসার ও নির্বাহী প্রকৌশলী হাতে কোনো ফাইল আটকে থাকে না, নিয়মিত স্বাক্ষর হয়।

পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য ঝুমুর সরকারকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ইনকিলাবকে বলেন, ভাই আমি আপনার ছোট বোনের মতো নিউজ করার দরকার নেই। কাল অফিসে আসেন কথা বলবো। বারবার সেবা ভোগান্তি কথা জানতে চাইল উত্তর না দিয়ে একই কথা বলে। তিনি আরো বলেন, আমার মা অসুস্থ আমি তিনদিন ছুটিতে আছি, পরে কথা বলবো।

আরেক দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য মোহা. রফিকুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, আমি নিয়মিত অফিস করি, সকল কর্মকর্তার পরে যাই, কর্মের কোনো কাজই ফাঁকি দেই না। সাংবাদিক ভাই দেখেন আমার টেবিলে কোনো ফাইল স্বাক্ষর করতে বাকী নেই। একাধিক ঠিকমত অফিসে আসেন না ও টিসিবি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ভোগান্তি হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক রাসেল ইকবাল ইনকিলাবকে বলেন, ইউএনও হিসাবে সদ্য যোগদান ও পৌর দায়িত্ব নেওয়ার পরে সেবাপ্রাপ্তি ভোগান্তির অভিযোগ আজই শুনলাম, তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঠিক করে দিবো। একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে বুঝতে ও সময় লাগে। কারোর অনিয়ম করার সুযোগ নেই। হয়তো সবাই সব কাজে নতুন তাই একটু সমস্যা হতে পারে।

Source link

Exit mobile version