আমিরাতে শিশুহত্যার দায়ে ভারতীয় নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে এক ভারতীয় গৃহকর্মীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। চার মাস বয়সী এক শিশুকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে এই শাস্তি দেওয়া হয়।
ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, শাহজাদি খান নামের ওই নারী গত মাসে আবুধাবিতে মৃত্যুদণ্ডের সাজা ভোগ করেন। তবে, শাহজাদীর পরিবার দাবি করেছে, তিনি নির্দোষ এবং শিশুটি ভুল টিকাদানের কারণে মারা গিয়েছিল। তারা আরও অভিযোগ করেছে, মামলার শুনানির সময় ওই নারী পর্যাপ্ত আইনি সহায়তা পাননি।
আরও পড়ুন>>
৩৩ বছর বয়সী শাহজাদি খান ২০২১ সালে উত্তর প্রদেশ থেকে আবুধাবিতে যান এবং সেখানে এক ভারতীয় পরিবারে গৃহপরিচারিকার কাজ নেন। ২০২২ সালে ওই পরিবারে শিশুটির জন্ম হয়।
শাহজাদি খানের পরিবার জানিয়েছে, তিনি প্রায়ই তাদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতেন এবং শিশুটির খোঁজ দিতেন। তবে হঠাৎ করেই সেই কল বন্ধ হয়ে যায়। পরে শাহজাদীর পরিবার জানতে পারে, তিনি জেলে আছেন।
পরিবারের ভাষ্যমতে, শিশুটি ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর মারা যায় এবং কয়েক সপ্তাহ পর শাহজাদিকে গ্রেফতার করা হয়। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে আবুধাবির একটি আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
কারাগার থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি শাহজাদি খান তার পরিবারের সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলেন। ফোনে তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তাকে আলাদা সেলে রাখা হয়েছে এবং হয়তো এটি তার জীবনের শেষ ফোনকল।
পরিবার তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়ে নিশ্চিত হতে ভারতের দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করে। পরে ভারত সরকার জানায়, ১৫ ফেব্রুয়ারি তার শাস্তি কার্যকর হয়েছে।
পরিবারের দাবি, উপযুক্ত আইনজীবী না পাওয়ার কারণে ওই নারী সঠিক বিচার পাননি। তার বাবা শব্বির খান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। আমি বহু জায়গায় চেষ্টা করেছি, কিন্তু আবুধাবি গিয়ে আইনজীবী নিয়োগ করার মতো টাকা ছিল না।
এদিকে, শাহজাদি খানের নিয়োগকর্তা বিবিসি’কে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, শাহজাদি নির্মমভাবে আমার সন্তানকে হত্যা করেছে, যা আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি আরও দাবি করেন, সত্য ঘটনা আড়াল করে সহানুভূতি আদায়ের জন্য গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।
ভারতীয় পার্লামেন্টে দেওয়া তথ্যানুসারে, বর্তমানে বিদেশের বিভিন্ন দেশে ৫৪ জন ভারতীয় মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষায় আছেন, যার মধ্যে ২৯ জনই সংযুক্ত আরব আমিরাতে বন্দি।
সূত্র: বিবিসি
কেএএ/