Status

আদমজী ইপিজেডে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে বিএনপি’র দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেডে গার্মেন্টস ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপি’র দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এসময় এক সাংবাদিকের মোটরসাইকেলসহ ১০টি মোটরসাইকেলে অগ্নি সংযোগ ও আশেপাশে কয়েকটি দোকানে হামলা করা হয়। এতে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী তোফাজ্জল হোসেনসহ উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে রাত আট টা পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী মুনলাইট এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় নারায়ণগঞ্জ-আদমজী- শিমরাইল সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পুলিশসহ যৌথবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

 

জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে আদমজী ইপিজেড অভ্যন্তরে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মানিক ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোহনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। আদমজী এলাকায় সংঘর্ষে চলে। এ সময় উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়ারা যায়, আদমজী ইপিজেডের ইউনিভার্সেল নামের একটি গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর এবং বিএনপি নেতা মনির হোসেনের সহযোগীদের মধ্যে দুপুরে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। তখন মনির হোসেনের নেতৃত্ব তার সহযোগীরা ইপিজেডের ভেতরেই ছাত্রদলের দুই নেতাকে কুপিয়ে জখম করে।

 

এরই জের ধরে পরবর্তীতে বিকেলে উভয় পক্ষের মধ্যে গুলিবর্ষণসহ ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময়ে তোফাজ্জল হোসেন নামে স্থানীয় এক গণমাধ্যম কর্মীসহ নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সহ সভাপতি আরিফ হোসেন, সাংগঠনিক সহ সম্পাদক মোহন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মানিক, মাহবুব, সবুজ, শহীদসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। এসময় একজন সাংবাদিকের মোটরসাইকেলসহ মোট ১০ টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

 

নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সদ্য সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর সাংবাদিকদের জানান, দুপুরে হঠাৎ করে আদমজী ইপিজেড অভ্যন্তরে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মানিক ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোহনকে কুপিয়ে জখম করে ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির নেতা মনির হোসেনের নেতৃত্ব রুহুল আমিন, বাবু, মাইচ্ছা মানিক, বুইট্রা রনি, পাগলা মিজান, সম্রাট জালাল উদ্দিন (পাগলা জালাল), দুলাল, সালাউদ্দিন ও খোকন ২০/২৫ লোকজন। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নেতা কর্মীদের উপর হামলার খবর পেয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আদমজী মুনলাইট এলাকায় জড়ো হলে সেখানে গিয়ে আগ্নে অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে। আমাদের ছাত্রদলের ছেলেদের কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এসময় মনিরের নেতৃত্ব সন্ত্রাসীরা কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে কয়েকটি দোকানে হামলা করে লুটপাট করে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

 

এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্যে বিএনপি নেতা মনির হোসেনকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এদিকে আহত গণমাধ্যম কর্মীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সহকর্মী মোস্তাক শাওন বলেন, তোফাজ্জলের অবস্থা ভালো না। ধারণা করা যাচ্ছে তার হাত এবং মাজার হাড্ডি ভেঙে গিয়েছে। তাকে নিয়ে খানপুর হাসপাতালে যাচ্ছি আমরা। মনির হোসেনের সহযোগী বিএনপি কর্মী রুহুল আমিন জানায়, ছাত্রদল নেতা সাগর আমার মার্কেটে হামলা করেছে। আমার মার্কেটে আটটা গুলি করছে। গুলির চিহৃ (প্রমাণ) আছে। তারা ১৫-১৬ টা হুন্ডা জ¦ালাইছে। মতির (সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক) সাথে আতাত করে মতির সকল ব্যবসা-বাণিজ্য ও অস্ত্র তাদের কাছে আছে। আমরা এমন কোন ছাত্রনেতা চাইনা যার কাছে অস্ত্র থাকবো।

 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম জানান, আদমজী ইপিজেডের ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। যৌথবাহিনীসহ আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছি। আমাদের ফোর্স এবং সেনাবাহিনীর সহযোগীতায় সামলানো গিয়েছে। সংঘর্ষে ৮-১০ আহত হতে পারে। এ সময় ৭-৮টি মোটরসাইকেলে আগুন নেয় হয়। এ ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। এখন পর্যন্ত কোন পক্ষই অভিযোগ দেয়নি।

Source link

Leave a Reply

Back to top button