Status

আওয়ামী লীগের অফিস ভাড়ায় চলে বিএনপির অনুষ্ঠান

খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর, যা খুলনা, সাতক্ষীরা এবং যশোর সড়কের মিলনস্থল হিসেবে পরিচিত, সেখানে প্রতিদিনই থাকে জনাকীর্ণ পরিবেশ। দেশের নামী-দামী প্রতিষ্ঠানগুলো এখানকার বড় বাজারে শাখা খুলেছে। যতীন কাশেম রোড বাজার সংলগ্ন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক স্থান ছিল আওয়ামী লীগের আটলিয়া ইউনিয়ন কার্যালয়।

এই কার্যালয়টি ছিল দুটি তলা বিশিষ্ট একটি ভবন, যেখানে নিচ তলায় দুটি দোকান ভাড়া দেওয়া হত এবং উপরের তলায় রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালিত হতো। তবে, ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর স্থানীয় ছাত্র-জনতা এই অফিসের আসবাবপত্র ভাংচুর করে এবং সাইনবোর্ডটি লাল রং দিয়ে ঢেকে দেয়।

স্থানীয়রা জানায়, বিগত ১৫ বছর ধরে এই অফিসটি ছিল স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রস্থল, যেখানে আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হয়রানি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন। তবে, ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর এই ভবনটি এখনো অক্ষত রয়েছে। ছাত্র-জনতা ভবনটি উচ্ছেদ করার উদ্যোগ নিলেও স্থানীয়ি এক বিএনপি নেতার হস্তক্ষেপে সে উদ্যোগ ভেস্তে যায়।

বর্তমানে ওই দুটি দোকানের ভাড়া নিচ্ছেন আটলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আব্দুস সালাম। তিনি জানান, খুলনা জেলায় আমি সব থেকে বেশি নির্যাতিত। আমার পরিবারের সবাই রাজনীতি জন্য নির্যাতিত, জুলুম, মামলা ও হামলার শিকার হয়েছে। আমার পরিবারের সকলেই জেল খেটেছে। ছেলে, মেয়ে, বউ, বোন সকলেই। আমি এই ইউনিয়ন যুব দলের সভাপতি ছিলাম এবং দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমি কেশবপুর রোডে বিএনপির বড় অফিস তৈরি করেছি, যেখানে অনেক অনুষ্ঠান হয়। সব খরচ ওই দোকান ভাড়া থেকে দেই। ওই দোকান দুটিতে ১০ হাজার ৫শ টাকা পাই মাসে। সব টাকাই আমাদের অনুষ্ঠানে খরচ করি।

ওই দুটি দোকানের ভাড়াটিয়া রয়েছে মজুমদার বুক হাউজ ও মেসার্স রাসেল হার্ডওয়ার নামের দুটি প্রতিষ্ঠান। কথা হয় তাদের সাথে। তারা জানান, এই ভবনটি আওয়ামী লীগের। উপরের তলায় পার্টি অফিস আর নিচ তলায় দুটি দোকান ভাড়া দেওয়া। ৫ আগষ্টের আগে এই দুটি দোকানে ভাড়া নিতো আওয়ামী লীগের বুলু মেম্বর। আর এখন ভাড়া নেয় আটলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ আব্দুস সালাম। আমরা দুটি দোকানে প্রতিমাসে ১১ হাজার টাকা ভাড়া দেই।

খুলনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম জানান, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। বিএনপির এই ধরণের কোন সিদ্ধান্তও নেই যে, অন্যের জায়গা দখল করতে হবে। তবে বিএনপির কোন কিছু কেউ দখল করলেও আমরা (বিএনপি) দখল নেব না। আইনের মাধ্যমে আমাদেরকে যেতে হবে। কেউ যদি এমন কিছু করে তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক নেই।

স্থানীয়দের দাবী, খুলনা জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। তা না হলে গুটি কয়েক মানুষের জন্য শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া বৃহত এই দলটির ভামুর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে।

 

Source link

Leave a Reply

Back to top button