Status

অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কঠোরতা চাই

হঠাৎ করে দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। রাজধানীর নাগরিকদের মধ্যে সন্ধ্যা নামতেই ভীতি-আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হাসিনা পালানোর পর পুলিশ সদস্যরা থানায় যোগদান না করায় আইনশৃঙ্খলার যে অবনতি ঘটেছিল বর্তমান পরিস্থিতি তার চেয়েও খারাপ। থানা পুলিশের কার্যক্রম ও তৎপরতা দেখতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ভোরেই থানায় হাজির হচ্ছেন। অপরাধ বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ ‘পরিকল্পিতভাবে আইনশৃঙ্খলার অবনতি’ করা হচ্ছেÑ এমন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। তবে দেরিতে হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর হয়ে উঠেছে। রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।

জানতে চাইলে সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ বলেন, ছয়-সাত মাসে পুলিশের যেভাবে একটু ঠিক হওয়া উচিত ছিল সেটি কিন্তু পারেনি। বাস্তবিক অর্থে দৃশ্যমান কোনো উন্নতি কিন্তু এখনো দেখছি না। আমি মনে করি, এই যে পুলিশ যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছে, এখনো তারা ট্রমা কাটিয়ে উঠতে পারেনি, এখনো এই ধাক্কার মধ্যেই যাচ্ছে। কোথাও গেলে মানুষজন অপমান করে, কোথাও গেলে কেউ তাদের কথা শুনতে চায় না। উল্টো কেউ কেউ পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এই যে, পুলিশের ম্যুরাল যে ডাউনটা হয়েছেÑ সেখান থেকে তাদেরকে টেনে উঠাতে হবে।

ঢাকাসহ সারাদেশে ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইসহ সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতির প্রেক্ষাপটে অপরাধের লাগাম টানতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে এরই মধ্যে সেনাবাহিনী, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট, র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যদের সমন্বয়ে যৌথবাহিনী গঠন করে টার্গেট এলাকায় জোরদার অপারেশন পরিচালনা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পাঁচ শতাধিক তল্লাশি চৌকি এবং অপরাধপ্রবণ এলাকায় টহল সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজিসহ নৈরাজ্য চললেও এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার কেউ নেই। ক্রমাগত হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের কারণে দেশজুড়ে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে, তা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম না হলে রাষ্ট্র ও সরকারের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়বে। যৌথবাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানে মাঠপর্যায় অস্ত্রধারীদের সঙ্গে তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদেরও গ্রেফতার করতে হবে। অপরাধ দমনে আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি সমাজের সচেতনতা বাড়াতে হবে। পুলিশি ব্যবস্থাপনা আরো উন্নত করতে হবে, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে অপরাধীদের দমানো না গেলে অপরাধের মাত্রা আরো বেড়ে যাবে। এই মুহূর্তে অপরাধ মোকাবিলায় পুলিশের কঠোর অভিযান ও সক্রিয়তা জরুরি। পুলিশের উদ্ধার না হওয়া অস্ত্রগুলো বড় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁঁকি তৈরি করেছে।

এ প্রসঙ্গে অপরাধ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, সাধারণ অভিযান চালিয়ে অস্ত্রধারীদের দমন করা সম্ভব নয়। যৌথবাহিনীর ধারাবাহিক অভিযান চালাতে হবে। মাঠপর্যায় অস্ত্রধারীদের সঙ্গে তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদেরও গ্রেফতার করতে হবে। অপরাধ দমনে আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি সমাজের সচেতনতা বাড়াতে হবে। পুলিশি ব্যবস্থাপনা আরো উন্নত করতে হবে, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। গত বুধবার ও গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও মোড়ে স্থাপিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বিত চেকপোস্ট এবং তল্লাশি চৌকির কার্যক্রম ও কয়েকটি থানা ঘুরে দেখেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের দোসররা এরই মধ্যে বেশ কিছু অপরাধমূলক কর্মকা- করেছে। সেসব ফুটেজ গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। তাদের চিহ্নিত করে দ্রুতই আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ঢাকাসহ সারাদেশে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। গত কয়েক দিনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ফুটেজগুলো দেখে জড়িতদের শনাক্তের কাজ চলমান। এছাড়া চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও হত্যাকা-ের মতো ঘটনায় ৫ আগস্টের পর যাদের নাম আসছে তাদের গ্রেফতারে জোর দেয়া হয়েছে। এমনকি সম্প্রতি কারাগার থেকে জামিনে আসা শীর্ষ সন্ত্রাসীরাদেরও নজরদারিতে আনা হয়েছে।

অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নাগরিকের নিরাপত্তাই রাষ্ট্রের নিরাপত্তা। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকার রাষ্ট্র কর্তৃক সংরক্ষিত এবং নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকারের রক্ষাকবচ। অন্য মানুষকে নিরাপদ রাখা ও বাঁচতে দেয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু সম্প্রতি নাগরিকরা যে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে, এটি বলার অপেক্ষা রাখে না। দিনদুপুরে প্রকাশ্যে গুলি চলছে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিকশাযাত্রী মা-বোনদের সবকিছু ছিনিয়ে নেয়া হচ্ছে। এর দ্রুত সুরাহা দরকার এবং যারা এসব করছে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় এনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা দরকার। একই সাথে বেকারত্ব কমাতে ও দ্রব্যমূল্যের উচ্চ দাম কমিয়ে আনতে সরকারকে মনোযোগী হওয়া জরুরি বলে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

আইজিপি বাহারুল আলম ইনকিলাবকে বলেন, রাজধানীসহ সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নের বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশিসহ অভিযান জোরদার করা হয়েছে। দেশের সব সংস্থার সমন্বয়ে সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সারাদেশের আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হবে বলে বাহারুল আলম মন্তব্য করেন।

রাজধানীজুড়ে পুলিশের ৫০০ টহল টিম : আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ঢাকা মহানগর এলাকায় পুলিশি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টা ডিএমপি ৫০টি থানা এলাকায় ৫০০টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করছে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৬৫টি পুলিশি চেকপোস্টসহ সিটিটিসি, এটিইউ, এপিবিএন এবং র‌্যাবের টহল টিম দায়িত্ব পালন করছে। ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ২৮৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ডিএমপির একাধিক সূত্র বলছে, রাজধানী ঢাকায় ভাসমান ও ছদ্মবেশী অপরাধীরা এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। এরা মূলত অপরাধ করে সরে পড়ে। ঠিকানাবিহীন এসব অপরাধী যেকোনো ধরনের অপরাধ সংঘটিত করে নির্বিঘেœ কেটে পড়ে। এদের শনাক্ত করতে গিয়ে বেগ পেতে হচ্ছে। ঢাকায় ছয় হাজারের বেশি অপরাধীকে ডিএমপির ডাটাবেজে যুক্ত করা হয়েছিল ২০২৩ সালের দিকে। তবে ভাসমান ও ছদ্মবেশী অপরাধীদের ডাটাবেজের আওতায় আনা হয়নি কখনো। এজন্য যারা ভাসমান অপরাধী রয়েছে তাদের শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, রাজধানীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে নৌবাহিনীর একটি অতিরিক্ত পেট্রোল এবং কিছু এলাকায় কোস্টগার্ডের একটি অতিরিক্ত পেট্রোল নিয়োজিত থাকবে। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট প্রধান, উপ-পুলিশ কমিশনার, সেনাবাহিনীর মাঠে নিয়োজিত ব্রিগেড প্রধান ও অন্যান্য দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রে সময়ে সময়ে গণমাধ্যমকে ব্রিফ করবেন। এ ছাড়া ডিএমপির পুলিশ সদস্য, বিজিবি, আনসার ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যদের জন্য মোটরসাইকেল ক্রয় করার সিদ্ধান্তও হয়েছে, যাতে করে তাৎক্ষণিকভাবে অলিগলিতে টহল দিয়ে অপরাধীদের পাকড়াও করা যায়। কোর কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঢাকা শহরের বাইরে, বিশেষ করে টঙ্গি, বছিলা, কেরানীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ বড় শহরগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বাড়ানো হয়েছে। ৫০০ এপিবিএন সদস্য ডিএমপিতে ন্যস্ত হয়ে পুলিশের সঙ্গে কাজ করবে। এ ছাড়া থানাভিত্তিক সন্ত্রাসীদের হালনাগাদ তালিকা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আইনের আওতায় আনতে ত্বরিত পদক্ষেপ নেবে। আর মিথ্যা, গুজব ও প্রোপাগান্ডার বিপরীতে সত্য তথ্যগুলো প্রচারে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের কয়েকজন এসআই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোনো অপরাধীকে ধরে আনলে অনেক সময় ছাত্র সমন্বয়করা সংঘবদ্ধ হয়ে আমাদের ওপর হামলা করছেন। এমন পরিস্থিতিতে বাইরে ডিউটি করে ভুক্তভোগীদের সেবা নিশ্চিত করা কঠিন। ঝুঁকি নিতে হচ্ছে প্রতিদিন। কিন্তু ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা বিশেষ করে অতিরিক্ত এসপি ও এএসপিরা মাঠে থাকছেন না।

বুধবার মধ্যরাতে রাজধানীর বিজয় সরণিতে ঢাকা মহানগরের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া রাজধানীতে সাম্প্রতিক সময়ে ছোটখাটো অপরাধ বেড়েছে বলে স্বীকার করেন। তবে তার দাবি, ছোট অপরাধ বাড়লেও কমেছে বড় অপরাধ।

সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ ইনকিলাবকে, সিএমপির সার্বিক আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নের ছিনতাই বিরোধী ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে। এরই মধ্যে ছিনতাইকারী গ্রেফতার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। রমজান মাসকে সামনে রেখে পণ্য মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়ন ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সিএমপির পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী প্রফেসর এবং অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, গণ-অভ্যুথানের ছয় মাস পরও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রত্যাশিত উন্নতি হচ্ছে না। মানুষের মনে নিরাপত্তা প্রশ্নে ভয়ের মাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এটিকে ভয়াবহ পরিস্থিতি হিসেবে আমরা দেখছি। প্রশ্ন হতে পারে, ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলো কীভাবে? কারণ হিসেবে বলা যায়, শুরু থেকেই কারণগুলো এড্রেস করা হয়নি বা সমাধান করা হয়নি। তার মধ্যে অন্যতম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা। শীর্ষ অপরাধী থেকে শুরু করে যারা নানা ধরনের অপরাধ করছে তাদের অপারেশন ডেভিল হান্টের আওতায় আনা প্রয়োজন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ অভিযান অপারেশন ডেভিল হান্টে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৯ দিনে মোট ১১ হাজার ৫৭০ জনকে গ্রেফতার হয়েছেন। পুলিশ সদরদফতর জানিয়েছে, আসামি গ্রেফতারের পাশাপাশি অস্ত্র উদ্ধার করেছেন অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা। দেশবিরোধী চক্র, সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীদের আইনের আওতায় আনতে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুরু হয়। এতে পুলিশ-র‌্যাবের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা এ অভিযানে অংশ নিচ্ছেন।

Source link

Leave a Reply

Back to top button