অতীতই প্রেরণা নিউজিল্যান্ডের

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নাম তখনও আইসিসি নকআউট বিশ্বকাপ। ২০০০ সালে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসরে যখন শিরোপা জয় করে নিউজিল্যান্ড, উইল ইয়াংয়ের বয়স তখন আট। ক্রিকেটের প্রেমে সবে পড়তে শুরু করেছেন। বৈশ্বিক আসরে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ট্রফি তার চোখে এঁকে দিয়েছিল স্বপ্ন। এখন সেই স্বপ্ন পূরণ করা থেকে ¯্রফে একটি জয়ের দূরত্ব। ২৫ বছর আগের সেই দিনটি দেশের ক্রিকেটে আবার ফিরিয়ে আনতে চান ইয়াং।
নাইরোবিতে ২০০০ সালের আসরের ফাইনালে অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলির সেঞ্চুরিতে ভারত করেছিল ২৬৪ রান। সেই রান তাড়ায় এক পর্যায়ে নিউজিল্যান্ডের রান ছিল ৫ উইকেটে ১৩২। কিন্তু ক্রিস কেয়ার্নসের দারুণ অপরাজিত সেঞ্চুরি ও ক্রিস হ্যারিসের সঙ্গে ১২২ রানের জুটিতে ম্যাচ জিতে নয় কিউইরা। সেই সময়ের সেরা অধিনায়কদের একজন স্টিভেন ফ্লেমিং উঁচিয়ে ধরেন ট্রফি। সেটিই প্রথম এবং শেষ। এরপর ২০০৯ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, ২০১৫ ও ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ এবং ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছে নিউজিল্যান্ড। প্রতিবারই ট্রফির মঞ্চ থেকে ফিরতে হয়েছে ব্যর্থ হয়ে। প্রথম আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা অবশ্য তারা জিতেছে ২০২১ সালে। তবে রঙিন পোশাকে বর্ণিল ফাইনাল আর আসেনি। ট্রফি সেই একটিই। দুই যুগেরও বেশি সময় পর আরেকটি ফাইনালের আগে ইয়াং ফিরে গেলেন তার সেই ছেলেবেলার স্মৃতিতে, ‘ওই স্কোয়াডে আইকনিক কিছু ক্রিকেটার ছিলেন এবং এখনকার দলের অনেকেই ওই ক্রিকেটারদের আদর্শ মেনেই বেড়ে উঠেছে। ২৫ বছর পর সেই কীর্তির পুনরাবৃত্তি করার সুযোগ পাওয়াটা দারুণ। আমার বয়স তখন ছিল আট বছর, সবে খেলাটির ভালোবাসায় পড়তে শুরু করেছিলাম। ওই টুর্নামেন্টে নিউজিল্যান্ড যেভাবে রাজত্ব করেছিল, তা ভালোভাবেই মনে আছে। তাদেরকে জিততে দেখাটা ছিল দারুণ ব্যাপার।’
এবার নিজেরাও সেই প্রাপ্তির আনন্দে ডুব দিতে চান। শুধু সেই স্মৃতির রোমন্থন নয়, নিজেরাও দেশক উপহার দিতে চান সেই সোনালী সাফল্য, ‘দেশ ছাড়ার সময় প্লেনে ওঠার আগে ওই সময়টার কথা ভাবছিলাম আমি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াড ঘোষণার দিন স্কট স্টাইরাস (সেবারের জয়ী দলের অলরাউন্ডার) ছিলেন। ওই দলের এবং টুর্নামেন্টে তাদের পারফরম্যান্সের কিছু গল্প শুনেয়েছিলেন তিনি। অতীতকে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারটি ভালো। নিউজিল্যান্ড আগেও কাজটা করেছে (চ্যাম্পিয়ন হয়েছে)। এখন ব্যাপারটা হলো সেই ধারা ধরে রাখার। আশা করি, দিন দুয়েকের মধ্যে আমরাও কাজটি করতে পারব।’
ভারতের সঙ্গে গত ছয় বছরে দারুণ কিছু লড়াই তাদের হয়েছে বড় মঞ্চে। ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে ভারতকে হারিয়েই তারা উঠেছিল ফাইনালে, ২০২১ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফি জিতেছিল ভারতীয়দের হারিয়েই। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে আবার কিউইদের রান জোয়ারে ভাসিয়েছিল ভারত। ইয়াংয়ের মতে, আগের ম্যাচগুলোর কোনো প্রভাব নতুন লড়াইয়ে থাকবে না, ‘টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ও ২০২৩ বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালসহ সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিপক্ষে বেশ কিছু দারুণ লড়াই আমাদের হয়েছে। ভারতের বিপক্ষে জমজমাট কিছু ম্যাচ খেলেছি আমরা। তবে সত্য বলতে, সেসবের মূল্য এখানে কমই আছে। নির্দিষ্ট দিনে জ্বলে ওঠার ব্যাপার এখানে, অতীতে পড়ে থাকার সুযোগ নেই। আমরা চেষ্টা করব মানিয়ে নিতে এবং রোববার আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ যেটাই আসুক, আশা করি আমরা নিজেতের খেলা মেলে ধরব ও স্নায়ুর চাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব।’

Source link

Exit mobile version